বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ।
শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৭০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪,১৪০ কিলোমিটার
জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই শত
শত নদীর মাধ্যমে বয়ে আসা পলি মাটি জমে তৈরি হয়েছে।
পদ্মা নদী
পদ্মা বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী। এটি হিমালয় পর্বতে উৎপন্ন গঙ্গা নদীর প্রধান শাখা। এটি ভারত থেকে বাংলাদেশে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা হয়ে প্রবেশ করেছে। আরিচাতে এটি যমুনা নদীর সাথে মিশেছে, এবং পদ্মা নামেই পরে চাঁদপুরে মেঘনার সাথে মিশেছে। অত:পর মেঘনা বঙ্গোপসাগরে শেষ হয়েছে।বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত।
মেঘনা নদী
মেঘনা নদী বাংলাদেশ এর একটি অন্যতম প্রধান নদী। পূর্ব ভারতের
পাহাড় থেকে উদ্ভূত মেঘনা নদী সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগর এ প্রবাহিত হয়েছে।
হালদা নদী
হালদা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি নদী। পার্বত্য চট্টগ্রামের বদনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। এটি এর পর দক্ষিণ-পশ্চিমে ও
পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফটিকছড়ির বিবিরহাট, নাজিরহাট, সাত্তারঘাট, ও অন্যান্য অংশ, হাটহাজারী, রাউজান,
এবং চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালী থানার মধ্য
দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা
চলাচলের উপযোগী থাকে।
প্রতিবছর হালদা নদীতে একটি বিশেষ মূহুর্তে ও
বিশেষ পরিবেশে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ও কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। ডিম
ছাড়ার বিশেষ সময়কে তিথি বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় জেলেরা ডিম ছাড়ার তিথির পূর্বেই নদীতে অবস্থান নেন
এবং ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন
বাণিজ্যিক হ্যাচারীতে উচ্চমূল্যে বিক্রী করেন।হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার কারণ
হালদা নদী এবং
নদীর পানির কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য এখানে মাছ ডিম ছাড়তে আসে যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে ভিন্ন তর । এই বৈশিষ্ট্যগুলো ভৌতিক , রাসায়নিক ও জৈবিক। ভৌতিক কারন গুলোর মধ্যে রয়েছে নদীর বাঁক , অনেকগুলো নিপাতিত পাহাড়ী ঝর্ণা বা ছড়া , প্রতিটি পতিত ছড়ার উজানে এক বা একাধিক বিল , নদীর গভীরতা , কম তাপমাত্রা , তীব্র খরস্রোত এবং অতি ঘোলাত্ব । রাসায়নিক কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে কম
কন্ডাক্টিভিটি , সহনশীল দ্রবীভুত অক্সিজেন । জৈবিক কারণ গুলো হচ্ছে বর্ষার সময় প্রথম বর্ষণের পর
বিল থাকার কারণে এবং দুকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীর পানিতে প্রচুর জৈব
উপাদানের মিশ্রণের ফলে পর্যাপ্ত খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে যা প্রজনন পূর্ব গোনাডের
পরিপক্কতায় সাহায্য করে। অনেক গুলো পাহাড়ী ঝর্ণা বিধৌত পানিতে প্রচুর ম্যেক্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান থাকার ফলে নদীতে পর্যাপ্ত খাদ্যাণু র সৃষ্টি হয় , এই সব বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে হালদা নদীতে অনুকুল
পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছকে বর্ষাকালে ডিম ছাড়তে উদ্ভুদ্ধ করে য
বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে আলাদা
কর্ণফুলী নদী
কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রধান নদী। এটি ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহাড়ে শুরু হয়ে
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার কাছে
বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর মোহনাতে বাংলাদেশের প্রধান সমূদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর অবস্থিত। এই নদীর দৈর্ঘ্য
৩২০ কিলোমিটার।
কর্ণফুলী নদীর নামের উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন কাহিনী প্রচলিত
আছে। কথিত আছে যে, আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক আদিবাসী রাজপুত্রের প্রেমে পড়েন। এক
জ্যোৎস্না স্নাত রাতে তাঁরা দুই জন এই নদীতে নৌভ্রমণ উপভোগ করছিলেন। নদীর পানিতে
চাঁদের প্রতিফলন দেখার সময় রাজকন্যার কানে গোঁজা একটি ফুল পানিতে পড়ে যায়।
ফুলটি হারিয়ে কাতর রাজকন্যা সেটা উদ্ধারের জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু
প্রবল স্রোতে রাজকন্যা ভেসে যান, তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়
নাই। রাজপুত্র রাজকন্যাকে বাঁচাতে পানিতে লাফ দেন, কিন্তু সফল
হন নাই। রাজকন্যার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেন। এই করুন কাহিনী থেকেই
নদীটির নাম হয় কর্ণফুলী। মার্মা আদিবাসীদের কাছে
নদীটির নাম কান্সা খিওং।
কাপ্তাই বাঁধ
কর্ণফুলী নদীর উপর বাঁধ দিয়ে রাঙামাটি জেলার
কাপ্তাই উপজেলায় কাপ্তাই বাঁধ তৈরি করা হয় ১৯৬৪
খ্রীস্টাব্দে। এই বাঁধে সঞ্চিত পানি ব্যবহার করে কাপ্তাই
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
সাঙ্গু নদী
সাঙ্গু নদী, স্থানীয়ভাবে শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম
অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর
পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর
উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের
বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ
চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিযে মিশেছে। উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০
কিলোমিটার।
সাঙ্গু নদী বান্দবান জেলার প্রধানতম নদী। বান্দরবান জেলা
শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত। এ জেলার জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে
জড়িত। বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম।
নাফ নদী
নাফ নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে বার্মা সীমান্তে অবস্থিত একটি নদী। এটি কক্সবাজার
জেলার দক্ষিণ পূর্ব কোনা দিয়ে প্রবাহিত। মূলত এটি কোন নদী নয়, বঙ্গোপসাগরের বর্ধিত অংশ। এর পানি তাই লবনাক্ত।
এর পশ্চিম পাড়ে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা এবং পূর্ব পাড়ে বার্মার আরাকান প্রদেশের
আকিয়াব অবস্থিত। এর প্রস্থ স্থান বিশেষে ১.৬১ কিমি হতে ৩.২২ কিমি হয়ে থাকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ
ব্রহ্মপুত্র নদী বা ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে
"ব্রহ্মার পুত্র।ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের নিকট জিমা ইয়ংজং
হিমবাহে, যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সাং পো নামে
তিব্বতে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে এটি অরুণাচল প্রদেশে ভারতে প্রবেশ করে যখন এর নাম
হয়ে যায় সিয়ং। তারপর আসামের উপর
দিয়ে দিহং নামে বয়ে যাবার সময় এতে দিবং এবং লোহিত নামে আরো দুটি বড় নদী যোগ
দেয় এবং তখন সমতলে এসে চওড়া হয়ে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র। তারপর
এটি ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে।
উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য ২৯০০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্থ ব্রহ্মপুত্র নদ বর্তমানে (২০১১)শীর্ণকায়।
বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের তালিকা
নিম্নে প্রদান করা হলঃ
- আত্রাই নদী
- আড়িয়াল খাঁ নদী
- কপোতাক্ষ নদ
- করতোয়া নদ
- কর্ণফুলী নদী
- কাঁকন নদী
- কীর্তনখোলা নদী
- কুশিয়ারা নদী
- খোয়াই নদী
- গড়াই নদী
- চিত্রা নদী
- জলঢাকা নদী
- ডাকাতিয়া নদী
- তিতাস নদী
- তিস্তা নদী
- তুরাগ নদী
- ধলেশ্বরী নদী
- ধানসিঁড়ি নদী
- নাফ নদী
- পশুর নদী
- পদ্মা নদী
- পাহাড়ীয়া নদী
- পুণর্ভবা নদী
- ফেনী নদী
- বড়াল নদী
- ব্রক্ষ্মপূত্র নদ
- বাঙালি নদী
- বালু নদী
- বিরিশিরি নদী
- বুড়িগঙ্গা নদী
- ভৈরব নদী
- মধুমতী নদী
- মনু নদী
- মহানন্দা নদী
- ময়ূর নদী
- মাতামুহুরী নদী
- মুহুরী নদী
- মেঘনা নদী
- যমুনা নদী
- রূপসা নদী
- শঙ্খ নদী
- শিবসা নদী
- শীতলক্ষা নদী
- সাঙ্গু নদী
- সুরমা নদী
- হালদা নদী
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ।
শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৭০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪,১৪০ কিলোমিটার
জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই শত
শত নদীর মাধ্যমে বয়ে আসা পলি মাটি জমে তৈরি হয়েছে।
পদ্মা নদী
পদ্মা বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী। এটি হিমালয় পর্বতে উৎপন্ন গঙ্গা নদীর প্রধান শাখা। এটি ভারত থেকে বাংলাদেশে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা হয়ে প্রবেশ করেছে। আরিচাতে এটি যমুনা নদীর সাথে মিশেছে, এবং পদ্মা নামেই পরে চাঁদপুরে মেঘনার সাথে মিশেছে। অত:পর মেঘনা বঙ্গোপসাগরে শেষ হয়েছে।বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত।
মেঘনা নদী
মেঘনা নদী বাংলাদেশ এর একটি অন্যতম প্রধান নদী। পূর্ব ভারতের
পাহাড় থেকে উদ্ভূত মেঘনা নদী সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগর এ প্রবাহিত হয়েছে।
হালদা নদী
হালদা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি নদী। পার্বত্য চট্টগ্রামের বদনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। এটি এর পর দক্ষিণ-পশ্চিমে ও
পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফটিকছড়ির বিবিরহাট, নাজিরহাট, সাত্তারঘাট, ও অন্যান্য অংশ, হাটহাজারী, রাউজান,
এবং চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালী থানার মধ্য
দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা
চলাচলের উপযোগী থাকে।
প্রতিবছর হালদা নদীতে একটি বিশেষ মূহুর্তে ও
বিশেষ পরিবেশে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ও কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। ডিম
ছাড়ার বিশেষ সময়কে তিথি বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় জেলেরা ডিম ছাড়ার তিথির পূর্বেই নদীতে অবস্থান নেন
এবং ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন
বাণিজ্যিক হ্যাচারীতে উচ্চমূল্যে বিক্রী করেন।হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার কারণ
হালদা নদী এবং
নদীর পানির কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য এখানে মাছ ডিম ছাড়তে আসে যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে ভিন্ন তর । এই বৈশিষ্ট্যগুলো ভৌতিক , রাসায়নিক ও জৈবিক। ভৌতিক কারন গুলোর মধ্যে রয়েছে নদীর বাঁক , অনেকগুলো নিপাতিত পাহাড়ী ঝর্ণা বা ছড়া , প্রতিটি পতিত ছড়ার উজানে এক বা একাধিক বিল , নদীর গভীরতা , কম তাপমাত্রা , তীব্র খরস্রোত এবং অতি ঘোলাত্ব । রাসায়নিক কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে কম
কন্ডাক্টিভিটি , সহনশীল দ্রবীভুত অক্সিজেন । জৈবিক কারণ গুলো হচ্ছে বর্ষার সময় প্রথম বর্ষণের পর
বিল থাকার কারণে এবং দুকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীর পানিতে প্রচুর জৈব
উপাদানের মিশ্রণের ফলে পর্যাপ্ত খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে যা প্রজনন পূর্ব গোনাডের
পরিপক্কতায় সাহায্য করে। অনেক গুলো পাহাড়ী ঝর্ণা বিধৌত পানিতে প্রচুর ম্যেক্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান থাকার ফলে নদীতে পর্যাপ্ত খাদ্যাণু র সৃষ্টি হয় , এই সব বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে হালদা নদীতে অনুকুল
পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছকে বর্ষাকালে ডিম ছাড়তে উদ্ভুদ্ধ করে য
বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে আলাদা
কর্ণফুলী নদী
কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রধান নদী। এটি ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহাড়ে শুরু হয়ে
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার কাছে
বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর মোহনাতে বাংলাদেশের প্রধান সমূদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর অবস্থিত। এই নদীর দৈর্ঘ্য
৩২০ কিলোমিটার।
কর্ণফুলী নদীর নামের উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন কাহিনী প্রচলিত
আছে। কথিত আছে যে, আরাকানের এক রাজকন্যা চট্টগ্রামের এক আদিবাসী রাজপুত্রের প্রেমে পড়েন। এক
জ্যোৎস্না স্নাত রাতে তাঁরা দুই জন এই নদীতে নৌভ্রমণ উপভোগ করছিলেন। নদীর পানিতে
চাঁদের প্রতিফলন দেখার সময় রাজকন্যার কানে গোঁজা একটি ফুল পানিতে পড়ে যায়।
ফুলটি হারিয়ে কাতর রাজকন্যা সেটা উদ্ধারের জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু
প্রবল স্রোতে রাজকন্যা ভেসে যান, তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়
নাই। রাজপুত্র রাজকন্যাকে বাঁচাতে পানিতে লাফ দেন, কিন্তু সফল
হন নাই। রাজকন্যার শোকে রাজপুত্র পানিতে ডুবে আত্মাহুতি দেন। এই করুন কাহিনী থেকেই
নদীটির নাম হয় কর্ণফুলী। মার্মা আদিবাসীদের কাছে
নদীটির নাম কান্সা খিওং।
কাপ্তাই বাঁধ
কর্ণফুলী নদীর উপর বাঁধ দিয়ে রাঙামাটি জেলার
কাপ্তাই উপজেলায় কাপ্তাই বাঁধ তৈরি করা হয় ১৯৬৪
খ্রীস্টাব্দে। এই বাঁধে সঞ্চিত পানি ব্যবহার করে কাপ্তাই
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
সাঙ্গু নদী
সাঙ্গু নদী, স্থানীয়ভাবে শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম
অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর
পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর
উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের
বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ
চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিযে মিশেছে। উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০
কিলোমিটার।
সাঙ্গু নদী বান্দবান জেলার প্রধানতম নদী। বান্দরবান জেলা
শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত। এ জেলার জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে
জড়িত। বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম।
নাফ নদী
নাফ নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে বার্মা সীমান্তে অবস্থিত একটি নদী। এটি কক্সবাজার
জেলার দক্ষিণ পূর্ব কোনা দিয়ে প্রবাহিত। মূলত এটি কোন নদী নয়, বঙ্গোপসাগরের বর্ধিত অংশ। এর পানি তাই লবনাক্ত।
এর পশ্চিম পাড়ে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা এবং পূর্ব পাড়ে বার্মার আরাকান প্রদেশের
আকিয়াব অবস্থিত। এর প্রস্থ স্থান বিশেষে ১.৬১ কিমি হতে ৩.২২ কিমি হয়ে থাকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ
ব্রহ্মপুত্র নদী বা ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে
"ব্রহ্মার পুত্র।ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের নিকট জিমা ইয়ংজং
হিমবাহে, যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সাং পো নামে
তিব্বতে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে এটি অরুণাচল প্রদেশে ভারতে প্রবেশ করে যখন এর নাম
হয়ে যায় সিয়ং। তারপর আসামের উপর
দিয়ে দিহং নামে বয়ে যাবার সময় এতে দিবং এবং লোহিত নামে আরো দুটি বড় নদী যোগ
দেয় এবং তখন সমতলে এসে চওড়া হয়ে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র। তারপর
এটি ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে।
উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য ২৯০০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্থ ব্রহ্মপুত্র নদ বর্তমানে (২০১১)শীর্ণকায়।
বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের তালিকা
নিম্নে প্রদান করা হলঃ
- আত্রাই নদী
- আড়িয়াল খাঁ নদী
- কপোতাক্ষ নদ
- করতোয়া নদ
- কর্ণফুলী নদী
- কাঁকন নদী
- কীর্তনখোলা নদী
- কুশিয়ারা নদী
- খোয়াই নদী
- গড়াই নদী
- চিত্রা নদী
- জলঢাকা নদী
- ডাকাতিয়া নদী
- তিতাস নদী
- তিস্তা নদী
- তুরাগ নদী
- ধলেশ্বরী নদী
- ধানসিঁড়ি নদী
- নাফ নদী
- পশুর নদী
- পদ্মা নদী
- পাহাড়ীয়া নদী
- পুণর্ভবা নদী
- ফেনী নদী
- বড়াল নদী
- ব্রক্ষ্মপূত্র নদ
- বাঙালি নদী
- বালু নদী
- বিরিশিরি নদী
- বুড়িগঙ্গা নদী
- ভৈরব নদী
- মধুমতী নদী
- মনু নদী
- মহানন্দা নদী
- ময়ূর নদী
- মাতামুহুরী নদী
- মুহুরী নদী
- মেঘনা নদী
- যমুনা নদী
- রূপসা নদী
- শঙ্খ নদী
- শিবসা নদী
- শীতলক্ষা নদী
- সাঙ্গু নদী
- সুরমা নদী
- হালদা নদী
গোমতী নদীর নামটি সংযযনের অনুরধ করছি।
ReplyDelete